মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘বাংলাওয়াশ’ ডায়েরি!
খেলা মানেই জনপ্রিয় নির্মাতা ফারুকীর উচ্ছ্বাস, তারুণ্যের এক প্রবল উন্মাদনা। খেলা চলা মানেই মুহূর্মুহু নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস; কখনো তা টেনশন মাখানো আবার কখনো আবেগাপ্লুত। খেলার সাথে যেনো ফারুকীর এক নিবিড় বন্ধন। তা সেটা ফুটবল হউক, কিংবা ক্রিকেট।আর বাংলাদেশের খেলা হলেতো কথাই নেই!
হ্যাঁ, অবিস্মরণী ‘বাংলাওয়াশ’ নিয়েও যথারীতি তিনি উচ্ছ্বসিত। তবে এবারের উচ্ছ্বাসটা তার একটু অন্যরকম। কারণ বহুদিন পর তিনি মাঠে গিয়েছেন খেলা দেখতে, আর গিয়েই পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দিয়েছেন, সেই সাথে করেছেন বাংলাওয়াশও। তাই তার উচ্ছ্বাসটা এবার যেনো বাঁধ ভাঙা।
মাঠে উপস্থিত থেকে বাংলাওয়াশকে কিভাবে স্মরণীয় করে রেখেছেন, তার বিস্তারিত অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি ‘বাংলাওয়াশ ডায়েরি’ নামে একটি লেখা ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন।
নির্মাতা ফারুকী তার ‘বাংলাওয়াশ’ ডায়েরিতে লিখেন, ‘কত বছর পর যে স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে গেছি সেটা মনেও করতে পারছি না ।
আজকের দিনটা তাই আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে । স্মরণীয় দিনে স্মরণীয় জয়।
স্টেডিয়ামের গর্জন গায়ের চামড়ায় যেভাবে এসে লেগে লোম খাড়া করে দিয়েছে সেটা আমাকে ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলো। আহা, জীবন কত সুন্দর । আদিল ভাই, ধন্যবাদ আমার আলস্য ভেঙে স্টেডিয়ামে নিয়ে যাওয়ার পিছনে প্রধান প্ররোচনাকারীর ভূমিকা পালন করার জন্য । কিন্তু মামা তো ফেসবুকেই নাই। মিঠু, তুমি বলে দিও।
এক এবং অদ্বিতীয় চৌধুরী জাফর উল্লাহ ভাইয়ের সাথে রেডিও স্বাধীনে ধারাভাষ্য দেয়ার অভিজ্ঞতা " বর্ণনার বা- - - - - -ই- - - - - রে"। ( শরাফত ভাই স্টাইলে অভিজ্ঞতাকে উড়িয়ে মাঠের, থুক্কু, বর্ণনার বাইরে পাঠিয়ে দিলাম )
সবচেয়ে থ্রিলিং অভিজ্ঞতা ছিলো মাঠে নামার। যদিও খেলতে নামি নাই, বাউন্ডারির বাইরে হাঁটাহাঁটি করতেই নেমেছিলাম, তাতেই আমার হাঁটু কাঁপার জোগাড় ।খেলোয়াড়রা কেমনে এই চাপ সামলায়?
এখনো রেড কার্পেটে হাঁটতে গেলে হাঁটু কাঁপে। তিশাকে ঠেলাঠেলি করি আগে যেতে, আমি খালি পিছে পিছে যাবো।
তিশার কথা যখন আসলোই, আজকের একটা মজার কথা বলি। সাথে সাথে একটা স্বীকারোক্তি আছে করবার ।
মাঠে নামার পর কাছের গ্যালারি থেকে প্রথমে শ্লোগান আসতে শুরু করলো "তিশা, তিশা "। যদিও তিশা তখন উত্তরা শুটিং -এ। তারপর যুক্ত হলো " তিশা - ফারুকী, ফারুকী - তিশা "। আমি খুব লজ্জা পাচ্ছিলাম । Toffael Rashid বারবার আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করছিলো দর্শক ভাই বোনদের দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ার জন্য । আমার মধ্যবিত্ত আড়ষ্টতা আমার দুইটা হাতকে গাছের অসাড় কান্ড বানিয়ে ফেলেছিলো । আমি হাত নাড়ি, কিন্তু হাত নড়েনা। আমি স্পষ্ট টের পাই ভেতরে আমার মন কৃতজ্ঞতার ঝড়ে নড়ছে। কিন্তু হাত নড়ে না ।
যাই হোক, শেষমেষ পেরেছিলাম হাত তুলে নাড়তে।
আজকে একটা কথা ভাই ও বোনেরা আমার, এই রকম অবস্হায় আমাকে দেখলে ভেবোনা ভাব নিচ্ছি বা অবজ্ঞা করছি। ভেবো, লাজুক মানুষটার একটু সময় লাগবে । তবে তোমরা ভালবাসা দিয়ে সহজ করে নিলে আমারও লজ্জা ভাঙা সহজ হয়।
যেমন আজকে ঐ গ্যালারির ভাই বোনেরা অনেকক্ষণ ধরে শ্লোগান দিয়ে, ডেকে আমাকে সহজ করে দিয়েছে ।
এতো লজ্জা লইয়া আমি কি করিবো’?